Thursday, June 21, 2012

*সুখ অন্বেষণ ।

বিঃ দ্রঃ- এই পোষ্টটি আমার সংগ্রহ করা লিখা থেকে দিয়েছি, তবে আমার পাঠক বৃন্দের কাছে আমার প্রশ্ন রইল যে,
আসলে সুখ কি ?? সুখ কি কেহ অন্বেষণ করে পেতে পারে ???

রাতের শেষ প্রহর চলছিল । গভীর ঘুমে নিমগ্ন ছিল পৃথিবী । রাতের প্রহরী ঝিঁঝি পোকারাও থামিয়েছিল তাদের গান, ডাহুক পাখিরা বন্ধ করেছিল তাদের করুণ কান্না । নিঝুম অন্ধকার আকাশের তারাগুলো মিটিমিটি জ্বলছিল । তবে সে আলোয় কিছু দেখা যাচ্ছিল না । মৃদু মৃদু হিমেল হাওয়ায় বেশ শীতলতাই লাগছিল । একাই বসে ছিলাম উন্মুক্ত ছাদের ওপর । যদিও শরীরটা হালকা শন শন করছিল, তবুও ইচ্ছা হয়ুন নিঝুম অন্ধকার নির্জন প্রকৃতির মাঝ থেকে সরে আসতে । তাকিয়ে ছিলাম ডজন ডজন মাইল দূর ওই আকাশের নক্ষত্রের দিকে । আর ভাবছিলাম চাঁদের আলোয় তো তারা দেখা যায় । সূবেয়র আলোয় কি তারা দেখা যায় ? মনে হচ্ছিল জীবনের সুখ যেন দূরের ওই নক্ষের মতোই । আধাঁর ছাড়া ধরা দেয় না, আবার তার আলো দিয়ে সবটুকু আাঁধার মুছে দেয় না । ভাবছিলাম জীনটা যুদ সিনেমার মতো হতো, তাহলে জীবনের সব দুঃখ-কষ্ট মাত্র তিন ঘন্টায় অবসান হয়ে যেত । জীবনের কাহিনী কি সিনেমার মতো ? হয়তো !! কিন্তু জীবন তো আর সিনেমার ফিল্ম না । কেন যে জীবন এত লম্বা সময়ের হলো ? উদাসী মনে এত সব তভাবতে ভাবতে দু নযন থেকে ঝরে পড়ছিল লোনা জল ।হৃদয়ের কোনো এক নিভৃত কোণ শূন্য হয়ে পড়ে আছে । আজও তা পূরণ করার প্রয়াস চালিযে যাচ্ছি । হয়তো  ব্যর্থ চেষ্ট সব ! আজকাল বন্ধুদের সঙ্গে সেই আগের মতো কুমার নদীর পাড়ে বসে আড্ডা অথবা বিনোদন আর ভালো লাগে না ।
অধিক সময়ই মৌনতার চাদরে ডুবে ডুবে অতীতের একান্ত স্মৃতিগুলোই ভাবি । স্মৃতি শুধু বেদনা দিতে জানে, সুখ দিতে জানে না, তবুও কেন জানি মনে হয় স্মৃতি বেদনার মাঝেই প্রকৃতির সুখ লুকিয়ে আছে । আজকের মৌনতার সঙ্গে নিঃসঙ্গতা ভর করে শ্বাসরুদ্ধ করে তুলেচে আমাকে । তাই ইচ্ছা করছিল দৃপ্ত কন্ঠে ওই নাম ধরে ডাক ‍দিয়ে সমস্ত মৌনতার অন্তিম ঘটিয়ে প্রাণের অনন্ত তৃষ্ঞা মিটিয়ে নিই ।
আর কিছুক্ষণ পরেই রুপালি ঝর্ণার মতো চিকচিকে সকাল নামবে আকাশের গা বেয়ে । সন্ধ্যার ম্লান আভা থেকে রজনীর শেষ প্রহর পর্যন্ত অনেক প্রশ্নরুদ্ধ হয়েছি নিজের কাছে । মেলাতে পারিনি সেসব প্রশ্নের উত্তর । তোমার নিষেধাজ্ঞা তাই তো অভিমানী মন নিয়ে তোমাকেও ছুড়ে দিলাম না নতুন কোনো প্রশ্ন । সারাজীবন তোমার অন্বেষণে ঘন অরণ্যের মধ্যে চরণ চিহ্নহীন অনেক পথ হেঁটেছি । তবে আর কত নদী, সমুদ্র-পর্বত উলঙ্ঘন করলে তোমার হৃদয় দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাতে পারব তা আজও অজানাই রয়ে গেল । বক্ষে বজ্র বেদনা নিয়ে যখন বসন্তের উদাসী দুপুর কিংবা বিকেলের হাওয়ায় ঘুরে দাঁড়াই তখন একটা শব্দই আমার কানে বাজে-পরিত্যক্ত সময়ের সাড়া । যেখানে হাসি ছিল, আনন্দ ছিল আর জীবনের সুখপাখি হয়ে এ হৃদয়ে তুমি শান্তির নীড় বেঁধেছিলে আমাকে রঙিন স্বপ্ন দেখাতে, পাশে বসিয়ে সুমধুর কন্ঠস্বরে গান শোনাতে, মুগ্ধ হতাম তোমার পায়ের নূপুরের শব্দ, কোমল হাতের ভঙ্গি আর মায়াবী চোখের চাহনিতে । আমিও সরল বিশ্বাসে তোমার অভয়বাণীতে সাড়া দিলাম ।
অবিশ্বাস্য সেই তুমি রুপালি ডানা মেলে উড়ে গেলে এ হৃদয় পিঞ্জর ছেড়ে । না জানি আজ অন্য কোন ‍হৃদয়ে শান্তির দূত হয়ে বাস করছ । শেষ পর্যন্ত তোমারই দেখানো একটি মাল্টিকালারের স্বপ্ন চির নিদ্রার হাতে খুন হলো । স্বপ্ন হারা হয়েও এলোমেলো উদাসী মনটা নিয়ে তোমার ফেরার প্রতীক্ষায় বসে থাকি বক্ষে আকুল তৃষ্ঞা নিয়ে । জানি এ আজ অসম্ভব । যেমন অমাবস্যা রাতে পূর্ণিমা চাঁদের  দেখা মেলে না তাই তো ভাবনার অনেক গভীরে ডুব দিয়ে একটি নতুন হৃদয় খুঁজে পেয়েছি, জীবনের কোমল কম্পনকে ধরে রাখার জন্য । সেখানে যদিও কেউ নেই তুমি অথবা অন্য কেই । নতুন সে হৃদয়টি হলো-বকরঙের কাগজ আর কলমের কোকিল বর্ণের কালি । কোমলিকা, ও কোমলিকা, মনে পড়ে আমাকে ? সেই তাকে প্রতিদিন বিকেল বেলা কুমার নদীর পাড়ে তোমার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকত যে, আর নিদরুণ ভালোবাসত তোমাকে ।
=======================================================

No comments:

Post a Comment