কবিতা সংগ্রহ

*আমি যে কবিতা গুলি এখানে লিপিবদ্ধ করিতেছি এগুলো আমার এক খুব প্রিয় এবং কাছের বন্ধুর নিজের রচয়িত কবিতা। তাঁর কবিতার কথা এবং তাঁর গভীর চিন্তা আমাকে মুগ্ধ করেছে । তাঁর নামটা আমি উল্লেখ না করেই পারলাম না । তাঁর নাম হচ্ছে মাহী । মাহী তোমার তোমার কবিতার ভাবনা দেখে আমি মুগ্ধ, তুমি জীবনে অনেক বড় হবে । এবং অনেক দূর পর্যন্ত যেতে পারবে, তোমার জন্য অনেক অনেক দোয়া রইলো ।

আমি মৃত্যু দেখেছি ।
কঠিন, বর্বর, নির্লিপ্ত এক মৃত্যু ।
তোমার হাতে আমার ধূসর, বিবর্ণ শব্দগুলোর/স্বপ্নগুলোর
নির্লপ্ত এক মৃত্যু ।।

আমার স্বপ্ন তোমাকে ঘিরে ছিলো না,
আমি তোমাকে নিয়ে বাঁচতে চাই নি,
আমার নিজের জীবন, নিজের ইচ্ছা
নিজের প্রতি ভালোবাসা
সবসময় বড় ছিলো, সবসময়
থাকবে ।

(১)
চোখের সামনে আমার
বইয়ের সমুদ্র ;
এক রাত, দু’রাত, হাজারো রাত কাটে বিনিদ্র
এলোচুলে, বই খুলে এই যে আমার বসে থাকা,
অনিশ্চিত ভবিষ্যত পানে ধীরে পায়ে এগিয়ে যাওয়া ।
সাদা পাতা খাতার
কালো মেঘে পূর্ণ ।
জলে জলে লিখে যাই ; করে যাই হিমালয় চূর্ণ ।।

(২)
কোন এক কালে সে ছিলো পাশে,
আমার অস্তিত্বের সাথে ছিলো মিশে ।
নীলরঙা আকাশের মতো তাঁর শাড়ি
হাওয়ার তালে উড়ন্ত আঁচল,
ঠোঁটে তাঁর ভুবন ভুলানে হাসি,
দূর আকাশের ধ্রুবতারার মতো উজ্জল ।
হাতে তাঁর দু’এক গাছি চুড়ি,
নৃত্যেমত্ত ‍কিশোরীর নুপুরের নিক্কন.
রেশম কালো চুলের সমাহার ;
বুনো ফুলের গন্ধের নেশায় ধরায় কাঁপন
পৃথিবীর সবচেয়ে স্নেহময়ী,
সবচেয়ে রুপবতী যে রমনী--
আমার মা ।।

(৩)
সিলিং এর সাদা বিদঘুটে রং
আমার আকাশ,
ঘূর্ণায়মান পাখার উত্তপ্ত হাওয়া,
আমার পৃথিবীতে উত্তাল কালবৈশাখী
চার দেয়ালের মাঝে
আমার এই ছোট্ট পৃথিবী
এক কোণে ক্ষুদ্র জানালা
তার ওপরে বিবর্ণ পর্দা আমার ক্যানভাস,
বইয়ের তাকের সাজানো এক একটা বই
যেন আমার ছোট বেলার হারানো সই,
এই যে আমার গল্প লিখার খাতা,
নির্ঘুম রাতে আমার সাথে তারই জেগে থাকা,
একাকীত্বকে চাই ভুলতে তাইতো এই লেখা ।
হারানো ‍দিন ফিরিয়ে দিতে হবে না,
চাইবো না কোন উপহার
এই সব কেবল মস্তিষ্কবিকৃত কিশোরীর
শব্দের সমাহার ।।
((এতো সুন্দর কথা এত সুন্দর চিন্তা তোমার মনে বা তোমার কল্পনায় কি ভাবে আসে, আমি পড়ে হতভম্ব। হাজারে চেষ্টা করে আজ পর্যন্ত একটা কবিতা লিখতে পারিনি । অবশ্য আমার চিন্তা গুলো এরকমি ছিলো । কিন্তু কোনভাবে রুপ ‍দিতে পারিনি ।))

(৪)
হঠাৎ এসেছিলো সেই পত্র,
অনেক দিনের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে,
বহু প্রতিক্ষীত পত্র ।
কত নামাজ, কত দরুদ এই পত্রের তরে,
ডাক পিয়নের ঘন্টার শব্দে চমকে ওঠে সবে,
চা খায়ার ছলে পত্রের অপেক্ষা ।
পোড় খাওয়া বৃদ্ধের ঝপসা কাচ,
হাড় কিপটে বুড়ির শাড়ির আঁচলে বাধা দু’তিনটে মলিন চাবি,
সব কিছুর অবসান এক পত্রে ।
সদ্য পাশ করে বের হওয়া তরুণের বিনিদ্র রজনী,
সেই সাথে মায়াময়ী তরুণীর রেগুলার প্রশ্ন
 “কিছু কী হলো”??
ছোট ছোট ভাই-বোনের মলিন মুখ,
সব কিছুর অবসান ঘটাবে একটি পত্র ।
কত ছল, ছলনা ভেঙে এসেছিলো
হাজার বছরের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটেছিলো,
এখনো ঘটে, ঘটবে তা অনিশ্চিত সময়েও
সাদা কালো সস্তা মিষ্টি বিলানো হবে পড়শীদের,
কোন রকমে তুলে আনা হবে নতুন বৌ ।
কিছুদিন কাটবে সুখে,
তারপর--
আবার সেই ইতিহাস, টানাপোড়েন,
রঙচটা পর্দার স্বপ্নের ঝিলিমিলি
আবার প্রতীক্ষা কোণ এক পত্রের,
হাজার বছরের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ।

(৫)
আমি দেখতে চাই না ; মুক্ত আকাশের বিহঙ্গের ডানা
দূর নক্ষত্রের আলোকে রাত্রি,
অবুঝ কিশোরীর হাতের পোষা ছানা
কোন এক রাতে ট্রেনের ঘুমন্ত মধ্যবিত্ত যাত্রী ।

আমি বুঝতে চাইনা, শীতের ঝরা পাতার আর্তনাদ
ঝরঝর বর্ষনের ধরনী কাঁপানো সুর
ছোট ছোট দাঁতের ফোকলা হাসির ডাক ;
তারাহীন রাতের নিস্তব্ধ নদীর কূল ।

আমি থাকতে চাই বহুদূরে, অনেক দূরে
কোন দূর নক্ষত্রের নিচে যেখানে শীতলতার হাতছানি:
কোন আলো নেই, নেই পেঁচার পাখা ঝাপটানি
কেটে যাবে ক্ষণ, সহস্র বছর ধরে হবু -
ছাড়তে পারিনি পিছুটান ।

ভুলতে পারিনি ভাইয়ের আর্তনাদ,
বাবার কোরান পড়ার মাতাল সুর,
মায়ের সস্তা চুড়ির রিনঝিন ঝংকার,
হাওয়ায় ভাসমান বোনের কলংকের মতো কালো চুল ।

(৬)
একলা আমি
বহুদূর পথ পাড়ি ‍দিয়ে একটু থামি,
পলকের জন্য খুলে দেই পুরনো স্মৃতির পাতা,
একটু ভাবি পাশে কেন নেই তুমি ?
নেই কিছুই, কেবল মাত্র সম্পর্কের আঁকি বুকিতে ভর্তি পাতা ।
হাজার ক্রোশ, লক্ষ কোটি মাইল দেবো পাড়ি ।
তাইতো এসেছিলাম হাত ধরে
হয়েছিলে তুমি আমার সাথী,
আজ পথভ্রষ্ট পথিকের জরায় জর্জরিত,
একলা আমি ।
নৌকো ভাসিয়েছিলাম দুই বৈঠার তরে,
একখানি আজ ডুবেছে নোনা জলে ।
তার কী আর দেখা মেলে ?

(৭)
লিখার কোন উপকরণ কী পেতে পারি ?
প্রকৃতির দুয়ারে হাত পেতে থাকি আমি,
রিক্ত হাতে যদি ফলতো ফসল,
ধরায় যদি হতো আনন্দের বর্ষণ,
কিছু মিথ্যে আশা, প্রত্যাশা
সবকিছু ছাপিয়ে আজ শুধু না পাওয়ার  হতাশা,
বয়ে বেড়াই আমি ।


(৮)
মানব মানবীর প্রেমের গল্প লিখা হয় না,
বিরহ বুঝে ওঠা হয় না,
তবুও প্রেম বিরহে কাতর আমি ।
প্রকৃতির দুয়ারে হাত পেতে থাকি ।
দুরত্ব শৈশব, উচ্ছল কৈশোর সবই পেরিয়ে যায়
বার্ধক্য নয় বার্ধক্য ব্যাধি কুড়ে কুড়ে খায়
আমার অন্তর, মণ, প্রাণ ।
জীবনের তরে জীবন বিনিময়,
কেন করে যাই মঞ্চ নাটকের মতো স্ক্রিপ্টবিহীন অভিনয় ।

(৯)
ধূসর বিবর্ণ শব্দগুলোকে বাঁচতে দিতে চাই না
চাই, আকাশের নীলের মাঝে হারিয়ে যাক সবগুলো শব্দ,
তবু বেঁচে থাকে আমার মস্তিষ্কের--
প্রতিটি সেলে, নিউরোনে ঝড় তোলে আমার প্রাণে
জাগিয়ে তোলে অদম্য ক্রোধ ঘৃণা এবং সীমাহীন দ্বন্দ ।
নোংরা কবিতার নোংরা শব্দগুলোকে মনে রাখতে চাই না,
চাই, সাগরের অতল গভীরতা নিয়ে সেগুলো তলিয়ে যাক নর্দমার জলে,
তবু ছেপে থাকে পদ্মফুল হয়ে আমার খাতায়
মধ্যরাতে সীমাহীন ব্যাথায় জাগিয়ে তোলে আমায়
যন্ত্রনায় কাতর আমি জেগে থাকি অপূর্ণ শব্দের খোঁজে
ধূসর বিবর্ণ শব্দ আর নোংরা কবিতাগুলো--
আমারই অংশ, আমারই আর্তনাদ
কেমন করে ছেড়ে বাঁচা যায় ।
=======================================================================

*প্রিয় বন্ধুরা আমি এখানে প্রথমেই বলে নিতে চাই যে। আমি যে কবিতা গুলো প্রকাশ করছি তার প্রায় কবিতাগুলি আমার সংগ্রহ থেকে। তাই আমি এই Page টার নাম দিয়েছি ‘’কবিতা সংগ্রহ”( যেহেতু কবিতাগুলো সংগ্রহের)। আমি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা এবং অন্যান্য বই থেকে সংগ্রহ করেছি। তাই বন্ধুদের নিকট আমি প্রথমেই বলে এবং ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আপনারা কিছু মনে করবেন্না। কবিতাগুলি আমার খুব ভালো লেগেছে তাই আমি এখানে সংগ্রহ করে রেখে দিচ্ছি।
যদি কারো কোন আপত্তি থাকে তাহলে আমাকে অনুগ্রহ পূর্বক জানাবেন। এবং E-mail এর মাধ্যমে আমাকে জানাতে পারেন, আমার E-mail add. হলো nurulhudabd01@yahoo.com এই ঠিকানায় জানালে আমি তা সংশোধন করে নিব।

(1) আবার যদি আমাকে চাও
আমি হারিয়ে গেলাম
স্বপ্ন ভরা সুন্দর পৃথিবী থেকে।
আমি চলে গেলাম
তোমারই চলার পথ থেকে।
এই জীবনে যতই খোঁজ আমায়
তুমি কখনই পাবে না আমায়।
ভালোবাসা যদি সত্যি হয় তোমার
তাহলে পরম জমে আমি হব তোমার।

অশান্ত মনে যদি আবার খোঁজ আমায়
আমাকে দেবার জন্য
তোমারই ভালোবাসাটা রেখ
আমারই জন্য তোলে।

যদি আমার শব্দ শুন চাও
এসো তুমি বৃষ্টির কাছে
শুনতে পাবে তোমায় নিয়ে রচিত
ভালবাসার গানগুলো।

যদি আমার বেদনা জানতে চাও
এসো তুমি নদীর কাছে
বুঝবে তাহলে আমার হৃদয়ের নীরব কান্নার ভাষা।

যদি আমার উদারতা জানতে চাও
এসো তুমি ঝর্ণার কাছে
বুঝবে তাহলে
আমার হৃদয়ের স্বচ্ছতা কতটা।

যদি আমার মমত্ব জানতে চাও
এসো তুমি বট বৃক্ষের নীচে
অনুভব করবে আমার হৃদয়ের
বিশালতা কত !

যদি আমার হৃদয়ের কঠরতা জানতে চাও
এসো তুমি পাথরের কাছে
জানবে তখন আমার হৃদয়
নির্মম কতট।

যদি তুমি আমার কষ্ট জানতে চাও
তাকিও মেঘলা আকাশের দিকে
দেখবে আমার হৃদয়ে
তোমারই জন্য
ভালোবাসার যন্ত্রনা আছে কতটা।

যদি আমার প্রেম চাও
চলে এসো চাঁদনী রাতের
খোলা আকাশের নীচে
পেয়ে যাবে আমার হৃদয়ের
মিষ্টি প্রেমের আলো।

যদি আমার ভালাবাসা চাও
এসে তুমি শিশুর কাছে
বুঝতে পারবে
আমার ভালোবাসার
পাগলমো কতটা।

যদি আমার স্পর্শ চাও
এসো তুমি সরিষা ক্ষেতে
ছুঁয়ে যাও হলুদ ফুলে
আনন্দ পাবে হৃদয়ের মাঝে।

যদি আমার বুকে মাথা রাখতে চাও
চলে এসো সবুজ প্রকৃতির বুকে
জানবে তখন
আমার ভালোবাসা কতটা নির্মল।

যদি হারাতে চাও আমার মাঝে
এসো তুমি সূর্যের কাছে
দেখবে তখন
তোমার প্রিয়ার উত্তাপ।
               =========================

 (2) ধূসর সময়

সময় গুলো এখন বড় ধূসর হয়ে যাচ্ছে,
ভাবনা গুলো এলোমেলো
কতগুলো কীট ক্রমাগত দংশন করে সময়কে।
মনের মাঝে জলাঞ্জলি দিয়ে রাখা
ভাবনাগুলো পাথর চাপা পড়ে অজান্তে।
গোধূলি বেলায় ম্লান আলো আস্তে আস্তে
নেমে আসে ধরণীর বুকে।
ঠিক তেমনি এক ঘোর অন্ধকার নেমে
আসছে এই করুণ মূহুর্ত গুলোতেও।
সময় গুলো এখন বড় ধূসর
ভাবনা এলোমেলো।
                   =========================            


(3) অপেক্ষা  

চাঁদনি রাত
একটুও মেঘ নেই আকাশে,
নেই কোনো কুয়াসা, যদিও রাতটি শীতের।
এখনো বাকি আছে অনেক কিছু পাওয়ার।
তাই তো এত অপেক্ষা।
আজ কোনো ভয় নেই মনে, যদিও রাতটি বেশ অন্ধকার
কেবলই ভাবি, কখন, কখন আসবে সকাল ?
কখন দেখব তারে ?
এক পলকের তরে।
কালো আকাশের ভাসা-ভাসা গোনা শেষ
দু’চোখের পাতাগুলো তবুও এক হতে চায় না
কেবলই ঘন হয়ে উঠছে নিঃশ্বাস।
তবুও গুনে চলি, এক তারা........দুই তারা...........তিন তারা............
সকালের অপেক্ষায়।
                      ==========================

(3) জীবনের সার্থকতা

মুখের কোণে একটু হাসি,
সারাদিন বাজাই বাঁশি।
জীবনের সার্থকতা কোথায়,
নিঃশ্বাসে না মোহিনী মায়ায়।
পথের ধূলায় জড়িয়ে পা
ঘুরে ফিরি জীবনের সার্থকতা।
============================           
(4) হরিণ মগজ

আমার রঙিন মণ হাওয়াতেই দোলে।
খুঁজে ফিরি চোখে তার হরিণ মগজ।
আর আমি খুঁজি মুক্ত পাখির ডানা
যার ভেতরে আছে
স্বাধীনাতর সুখ
লুধুয়া গাঁ 
পাপড়ির ভাঁজে ভাঁজে ফুলের বাগান।
                        ===========================

(5) পুরনো জীবনের গল্প

দেখাই হয়না আজকাল। আমরা বদলে গেছি।
গভীর রাতে আঁধার ঠেলে ঠেলে কবে থেকে
ধরা হয় না জানালার শিক।
তুমিও বিনিদ্র থাকোনা আর
হায় ! জীবন কত পরিবর্তন শীল !

বাতাবি গাছটার কথা মনে পড়ে খুব 
ভালোবাসার দূরন্ত আবেগে 
একদিন সন্ধায় তোমার কপোলে এঁকেছিলাম
দুর্লভ চুম্বন।
=========================                         


(6) মূল্যহীন যুক্তি

যখন তোমায় খুঁজি
সাবভার থেকে কৃত্রিম কন্ঠ
বুলি আওড়ায়, ইংরেজী-বাংলায়
তুমি ছেঁড়া ঘুরির মতো
লাপাত্তা হয়ে গেছ।
তোমার বিলাসবহুল ভাবনাগুলো
শিকাবী চিলের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় মেতেছে,
আমি মূল্যহীন যুক্তি দেখাই
সময়ের ব্যবধান তোমায় আটকে দেবে
কোনো এক সর্বগ্রাসী উদ্ভিদের কবলে।
                       =========================


(7) প্রশ্ন
এত ভালোবাসা রাখি কোথায় ?
কি ভাবে কুরিয়ার করি তোসার ঠিকানায় ?

কি ভাবে হলুদ খামে ভরি 
১৯ বসন্তের সঞ্চিত ভালোবাসা ?

আমি কি মানবহিতৈষী হবো
এক বুক ভালোবাসা নিয়ে ?

তুমি কি হতে পার না
এই ভালোবাসার দখলদার ?
=========================                    
(8) পিছু ডাকে

আমার ক্লান্ত পরিশ্রান্ত দিগন্তে স্বপ্নরা
কেঁদে ফেরে ঠিকানার সন্ধানে
দিশাহীন বিধ্বস্ত টাইটানিকের মতো
হারিয়ে গেছে আন্তরিকতার সব স্মৃতিচিহ্ন।

এখন আমার উদ্দেশ্যহীন জীবন পথচলা
নিরাশার দেশে বাস করে মনের ভেতর
জমা করে রাখা সুখ স্বপ্নের ভিত্তিবীজ
হাসির অন্তরালে গায় বিষাদ গীতি।

নিরুদ্দেশ স্বপ্নের ঠিকানা হাতড়ে
আমি চলে যাই শেকড়ের কাছে
ভোরের শিশির সিক্ত দুর্বার মতো
চকচক করে বিরহ বিধুর যন্ত্রণা,
অবাঞ্চিত সময়ের সবটুকু দায়ভার
আমাকে পিছু ডাকে অনিবার।
                  ==========================

(9) বসন্ত

তন্দ্রালসা পাখিদের কলকাকলিতে
জেগে ওঠে ভোরে-
অন্ধকারের আড়াল থেকে উকিদেয়
নির্মানাধীন বাড়ির জঞ্জালে,
ওদিকে সুদৃশ্য স্কাইস্ক্রেপারের গায়ে
পিছলে পড়ে ভোলের আলো
গাছপালা নতুন পাতায় ঝলমল,
পাতাকুড়ানির মেয়ে নেমে আসে
পাতা ঝরা পথে
সেকী জানে আজ দারুণ বসন্ত !
==========================                

(10) বসন্ত এসেছে

বসন্ত এসেছে পথে ধুলোর পতাকা ওড়ে
বসন্ত এসেছে বনে ফুলের গুলাল গাছে
বসন্তের আবাহনে আমার হৃদয় পোড়ে
কবে তুমি ফিরে আসবে আবার আমার বুকের কাছে।
প্রতিবার শীত শেষে বসন্তের বায়ু বয়
আমি ভাবি এবার আমার গৃহে আসবে নিশ্চয়।
দীনহীনে দয়া করে তুমি দেবে দেখা
কিন্তু তুমি নিঠুর পরশী আমি পড়ে রই একা।
বসন্তের বিলোল বিস্ফারে তরুশ্রেণী সিদুর বর্ণ ধরে
আমার সিদুর আঙুলের শীর্ষ রক্ত শুধু ঝরে।
                         ==============================

 (11) তুমি আছ বলে

তুমি আছ বলে আজ
সুখের ফাগুনে ছুয়ে যায় আমারই হৃদয়
তুমি আছ বলে আজ
একাকীত্ব চলে গেছে আমারই হৃদয় থেকে
তুমি আছ বলে আজ
দুঃখ গুলি চলে গেছে আমারই জীবনের পাশ কেটে
তুমি আছ বলে আজ
মন খুলে ভালবাসতে ইচ্ছে জাগে তোমাকে
তুমি আছ বলে আজ
হৃদয় কুটিরে আপন করে পেলাম আজ তোমাকে
এমনি ভাবে থেকো তুমি 
আমার জীবনের নীড়ে
যুগ যুগ ধরে থেক তুমি
জীবনের সাথী হয়ে।
                ===========================                   


(12) আশা লতা

আগে দেখবেন
জল শীতল না উষ্ণ
যদি শীতল হয়ে থাকে
তাহলে হাত দেবেন না।
আর যদি উষ্ণ হয়ে থাকে
তাহলে মণ বাইরে রাখবেন
কেননা সরল মণতো বুঝবে না সে
কোনদিকে যাবে।
আগে দেখবেন অনেক অচেনা লোক
আপনার গায়ে পড়ে
চাইবে আলাপ করতে কেউবা
বলবে ,আপনাকে কোথায় যেন
দেখেছি, কেউবা বলবে আপনি
দেখতে অনেকটা খাদিজা আপার মতো
আপনাকে ওরা মিথ্যে বলেছে
আপনার নরম সান্নিধ্যটুকু ওরা
ছুঁয়ে দেখতে চেয়ে ছিলো
মিথ্যুক স্তাবকের দল।
আমি কিন্তু ও সবের মধ্যে নেই
আপনাকে আমি ওদের মত কিছুই বলবো না
না ভালো লাগার জন্য না প্রতিক্ষার কথা
শুধু বলবো
উষ্ণ জলকে আপনিই শীতল করতে পারবেন।
আপনাকে একটু ছুঁয়ে দেখলেই বুজতে পারবো
কথাটি কি সত্যিই বল্লাম,
না মিথ্যে।
                        =============================

(13) তুমি আকাশের তারা হলে

তুমি চাইলে গোলাপের সুগন্ধি
সুরভিত আঙ্গিনা।
আমি গোলাপ হয়ে ফুটে উঠলাম,
তুমি চাইলে সাগর সেচা মানিক
আমি নিজেই সাগর হলাম।
তুমি চেয়েছিলে সৃষ্টি সুখের উল্লাস
আমি নিজেই হলাম তোমার ক্যান ভাস।
তুমি বল্লে আমি আকাশ ছুঁতে চাই
আমি পাখি হলাম।
অবশেষে তুমি আকাশ ছোঁলে
আকাশের তারা হয়ে ফুটে উঠলে
আমি পড়ে রইলাম
মাটির পৃথিবীতে একা।
                      =============================                    


(14) তুমি কারে খোঁজো

তুমি কারে খোঁজো প্রতিদিন
মনের মানুষ কে ?
এই আমাকে ?
কেন সামনে খোঁজো
কেন পেছনে তাকাও
কেন ডানে বাঁয়ে ফিরে ফিরে চাও
কেন আকাশ বাতাশ
খুঁজে ফেরো
কেন হেথায় হোথায় খুঁজে মরো
আমিতো আছি
তোমার কাছেই
তোমার মনের মাঝেই।
                      ===========================

(15) শেষ বলে কিছু নেই

পৃথিবীতে শেষ বলে কিছু নেই সেই পাখি ডাকা ভোরে
পদ্মপাতায় জমে বিন্দু বিন্দু কুয়াশার ঘাম
অলস দুপুরের এক পশলা হিমেল হাওয়া এসে
কপালে রঙিন চুমো যায় এঁকে
স্নিগ্ধ রোদে ভাসে লাজুক বিকেল
সাঁজের তারা জ্বলে নীল চাঁদেয়ার
আঁধারের পরতে পরতে রহস্যময়ী পয়মন্ত রাত নেমে আসে।
সবুজ ঘাসে টাপুর টুপুর ঝরে নিশির শিশির
চাঁদের জোৎস্নায় ভেজে রাতের শরীর
তখনো পৃথিবীতে ডানামেলে থাকে
প্রেম নামের ঐ মেয়েটি শুরু আছে, শেষ নেই যার
একটু একটু করে নেলে ধরে কেঁপে কেঁপে
যুবতী অধর পাঁজর।
                 ==========================                       


(16) ভালেবাসার সাত কাহন

১। ভরা নদীর তীরে পাশাপাশি দু’জনেই বসেছিলাম
পারস্পরিক উত্তাপে উত্তপিত উষ্ণতায় ভস্মীভূত হলাম।

২। শান্তির সপক্ষে নীলিমার অন্বেষণে দু’জনেই হাত বাড়ালাম
দু’হাতের সমৃদ্ধ ঘর্ষণে ভালোবাসার আগুনে পুড়ে গেলাম।

৩। সবুজের অপার ছায়া দু’চোখের গভীরে মেখে  ‍দু’জনেই অরণ্য হলাম
পাতার সাথে বাতাসের আলাপনে  ‍দু’জনেই মাতাল হলাম।

৪। গলে পড়া জোৎস্নায় ভিজে ভিজে দু’জনেই নিমগ্ন ছিলাম
ধলপহরের আলোর উত্তেজনার বশে দু’জনেই উজ্জীবিত হলাম।

৫। মনেুষের কোলাহল বাতাসের ঘূর্ণি উত্তাল জলস্রোত ধারা
আমাদের দু’জনকে দূর সুদূরের জীবনযাপনে নিয়ে গেল।

৬। সম্মান আর বিশ্বাসের আকাশ ছোঁয়া স্বপ্ন আমাদের ঘিরে রেখেছিল
আনন্দ বেদনার নিয়মিত ধারাপাত নতুন জীবন ‍দিয়েছিল।

৭। এত ভালোবাসা নিয়ে যে সাপের বন্ধনে দু’জনেই আবিষ্ট ছিলাম
সেইতো শিখিয়ে ছিল ভালোবেসে বারবার জীবন ভালো।
                           ===========================

(17)  প্রেমের চতুর্দশপদী

নক্ষত্রের গোলাপী আভায় তোমার গালের লাল
কাল রাতে আনন্দ ছুঁয়েছে। তোমার চুলের ফুলে
অসংখ্য মৌমাছি দুলে দুলে মধু খেয়ে ছিল কাল।
তোমার চোখের তারা আকাশের নীল তারা ভেবে
বর্ণিল কাগজ জুড়ে চিত্রকর এঁকেছিল ছবি, 
রক্তিম তোমর ঠোঁটে বাসনার বহ্নিশিখা দেখি
   দাউ দাউ জ্বলে ওঠে। যৌবন ডানা মেলা কোনো মুখের বিস্তার !

আমি প্রেমী, অনুরাগী, সেতারের মধুর ঝংকারে
তোমাকে জড়াতে চাই। সুরের নিবিড় জাল পেতে
মর্মের ভিতর বন্দি করে তোমার সংস্পর্শ চাই
হে মাধবী ! বাতাসের শিহরণে তোমার সুঘ্রাণ
উন্মাতাল করে তোলে। প্রেমে ও বিরহে আমি পুড়ি,
তোমার শরীর রেখা কামনার অগ্নিতে অহুতি।
                          ==========================                     

(18) নরকেও না স্বর্গেও না

তুই বললি ভালোবাসতে বাসতে
তোকে নিয়ে নরকেই যাব,
বললাম চল।
সেখানেই ফোটাবো পারিজাত
যুধিষ্ঠির হবো; দ্রৌপদী হবি তুই।
আতকে উঠে বললাস, না, না, না।
ওই হিপোক্র্যাট জুয়ারিকে
সহ্যই করতে পারি না আমি।
হবে অর্জুন হবো, তুই হবি আমার কৃষ্ণা।
বললাম ‘কক্ষনো না।

আমি ওই লমাটের মুখদর্শদ করব না
ওকে তো কী ভালোবেসে ছিলাম, কিন্তু
কী প্রতারণাই করল বল
তবে সহদেব ? নকুল
রূপবান জ্ঞানী দুই সহোদর
হেসে বলি এখনো বালক।
তবে ?
ভীম হবি ভীম হবি তুই
তোর কোলে মাথা রেখে মরণেও সুশ
জন্ম- জন্মান্তর ধরে তোকেই চাইব আমি
ওই হোঁৎক কেলো রাক্ষস ? হিতিম্বার স্বমী
পুত্র সার ঘটৎকচ তাই হবো আমি ?
ছি, ছি, ছি,
ওই তো পুরুষ রাগ আছে ক্রোধ আছে
স্ত্রীর অপমানে কষ্টের বোধ আছে,
কৃষ্ণার অপমানে দুর্যোধনের উরুভঙ্গ করছে কে ?
দুঃশাসনের রক্তপান করেছে কে ?
সেরিন্ঝ্রীর অপমানে কীচক বধ করেছে কে ?
দ্বিতীয় পাওব, নাম সার বীমসেন
মহাপ্রস্থানের পথে সেই ছিল সাথী
ওইতো মানুষ ! জন্মে- জন্মান্তর সেই আমার বন্ধু
সেই আমার স্বামী
বিরক্তি ভরা কন্ঠে তুই বললি”ভ্যাট”
নরকেও যাব না তোর সাথে স্বর্গেও যাব না।
                     ============================

(19) হৃদয়ে লেখা নাম
মনের ক্যামেরা দিয়ে তুলেছি যার ছবি
সেকি, মনে হারাবার কথা।
মনের অজান্তে লিখেছি যার নাম
সেতে, হৃদয় দিয়ে লেখা।
শত বেদনার মাঝে ভুলার চষ্টা করি
ভুলতে পারিনা তোমার নাম, 
হৃদয় দিয়ে লিখেছি বার বার
এটাই কি তার পরিণাম ?
ব্যর্থ হৃদয়ে দাউ দাউ করে জ্বলে
সেই মায়াবী নামটি স্মরণে।
তোমাকে আমি ভলিার চেষ্টা করি
এতটুকুও ভুলতে পারিনা।
তুমি যে আবার আসবে কাছে ওগো
এটাই ওতো আশা করি না।
মনের ডায়রিতে লেখেছি তোমার নাম
স্মরণ রাখবো বলে তোমাকে।
তোমার জন্য সব কিছু হারালাম
তবুও কি ভুলে যাবে আমাকে ?
============================                  

(20) শেষ মিনতি

ওগো
গরীব, নিঃস, এতিম হয়ে তোমার কাছে এসেছি।
বামন হয়ে চাঁদের আশা করে
তোমায় ভালবেসেছি।
আমার জীবনে কখনো আমি
ভুলতে পারবো না তোমায়
কখনো মিথ্যা চলে, আমায় নিঃস্ব বলে
ব্যর্থ বানাইওনা আমায়।
তোমার কাছে ভালোবাসা ছাড়া
অন্য কিছু চাবনা।
কোনদিন যদি ভুলে যাও আমায়
আমি কখনো বাঁচবোনা।

যেমনি আছ, তেমনি থাকবে
বদলে কখনো যাবেনা।
যদিও তুমি বদলে যাও ওগো
আমায় কখনো পাবেনা।
এখনো বলি নিঃস্বার্থ আমি
শেষ মিনতি করি তোমায়
সুন্দর জীবন গড়তে দিলে ওগো
কখেনো ভুলনা আমায়।
                 ==========================

(21) অন্যান্য ছোট ছোট কবিতা

#1. গোলাপ দেবতার সুগন্ধী
মানুষের আনন্দ
গোলাপ প্রস্ফুটিত প্রেম- সৌন্দর্যের প্রশংসা
ভেনাসের প্রিয় পুষ্প।

#2. মুটে যদি জোটে একটি পয়সা
খাদ্য কিনিও ক্ষুধার লাগি
মুটে যদি জোটে দুইটি পয়সা 
ফুল কিনে নিও হে অনুরাগী।

#3. এই চোখ কখনও হাসে
প্রেমময় আনন্দের ঝিলিক তুলে।
এই চোখ কখনও কাঁদে
প্রেম বিরহের অব্যক্ত হাহাকারে।

#4. চোখ কথা বলে।
চোখ নীরব থাকে।
চোখের ভাষায় চোখ
খেলে চলে তার আপন খেলা।

#5. ‍সুখ সুখ সুখ
চারিদিকে শুধু সুখ
ধরা যদি কেহ পড়ে সেই চোখে
সেই চোখেরই ঘুনার অনলে
জ্বলে পুড়ে কেউ খাক হয়ে যায়
এমনই চোখের রীতি।

#6. হায় চোখ
এ চোখে আমরা যা দেখি
তা কি সবই সত্যি ?
কিংবা সকলই মিছেমিছি ?
সকলই সত্য নয়
আবার মিথ্যেও নয় সকলই
সত্য মিথ্যার আলোছোয়া।

#7. এই  সত্য- মিথ্যা আছে বলেই
চোখ এত সুন্দর
চোখ এত কুৎসিত
তবুও সত্যের জয় অবধারিত।
সুন্দরের আগমণ অবশ্যম্ভাবী।
                 =========================

(22) জীবন নামের পাগলা ঘোড়া

দু’টি কবিতা। একটি গোলাক ধাধা অন্যটি শুধুই গাধা
     সমান তাল সমান লয় কিন্তু একে অপরের নয়।
দু’জনেই আমার। গড়ানো আমার সাজানো, আমার কথাতে আমার
   এমনকি গাধুনিতেও। অস্তিত্বের ভরসা নেই........
নেই স্বপ্ন বিলাসেও। স্বর্গের সোপানে বিচরনের সুখ একান্তই দু’জনার
   বিন্দু মনিতে আঁচ। ভেঙ্গে অনু। অনুবিক্ষন যন্ত্রটাও ব্যর্থ,
গোলাক ধাধার ঘুরানো শুরু.......গাধার পিষানী
   অন্তর পর্যন্ত। সহ্যের বাঁধ ভেঙ্গেছে সেই কবে.........
অসহ্য........পর্যায়ক্রমে পুনরাবৃত্তি। প্রতিজ্ঞা তাকতে পারবে না
   কোন আকৃতি। কি আর করা, ঘর্ষণের ফলে
পৃথিবী পরিয়ে দিল কড়া, মুছে শেষ..............
   জীবন নামের পাগলা ঘোড়া।
                     ===========================

(23) কে তুমি

ভালোবাসার ভালোলাগা
পাইনি আমি কখনো তা
বুঝিনিত আগে আমি
ভালোবাসার মধুরতা
অনুভব করিনি কখনো আমি
ভালোবাসার উষ্ণতা।

এতদিন পর একার দুষ্টুমীতে
হৃদয় ভরে গেছে মগ্নতায়
এই কে তুমি
যে তোমার দৃষ্টির প্রখরতায়
ভূলে যাই সকল কথা
এই কে তুমি ?

তোমার হাসিতে
হারিয়ে ফেলি নিজেকে
বলার সময় গুলিয়ে ফেলি সকল কথা
এই কে তুমি ?

তোমাকে দেখার জন্য
মণ কেন এত ছটফট হয়
তোমার কথা শোনার জন্য
মণ কেন হয় এত ব্যাকুল
এই কে তুমি ?

এই কে তুমি ?
তোমার ভাবনাতে
ঘুম চলে গেছে এ দুচোখ থেকে
ভূলে গেছি সকল চাহিদার কথা

এই কে তুমি ?
তোমারই কথা
আসে কেন মনে এত বার বার ?
তোমারই অচেতন মনের অবহেলায়
কেনই বা নিয়ে যেতে চায়
সেই বা নিয়ে যেতে চায়
সেই এলোমেলো জগতে
যে জগতে থাকে না কোন উদ্দেশ্য
থাকে না কোন আশা
থাকে অন্ধকারের হাতছানি
আর হৃদয় পোড়ার খেলা
আরো থাকে অসুন্দর মৃত্যুর সুন্দর দৃশ্য।

এই কে তুমি ?
ভাবছি আমি নিজেকে নিয়েও
আমারই অস্তিত্ত্বের কোন অংশতে
আছ তুমি মিশে
বুঝতে পারিনা আমি
কিইবা চাই আমি
তোমার কাছে ।

কে তুমি বল ?
অচেনা হয়ে থেক না আর
নেজের পরিচয় দাও একবার
আরো পরিচয় দাও
তোমার সাথে আমার
 মানসিক নাম না দেয়ার
এই সম্পর্কটার ।
========================    


(24) অন্য জগতের প্রেম
এই জগতে নেই কোন ভালোবাসা 
নেই কোন আপনজন
আছে শুধু বেদনা দেয়ার মানুষ জন
এভাবে চলতে চলতে
হারিয়ে যাব অন্য জগতে।
যদি না পাই আমি
মনের মানুষ
থাকব কেমনে পরবাসে
আছে যে আমার চাওয়া পাওয়ার 
আছে যে আমার মনে
ভালোবাসার নীল ঘাস ফুল
সে ফুল আবেশেতে
হারাতে চাই আমি তোমার মাঝে
থাকবেনা কেউ জানবে না কেউ
শিশব দু’জন  দুজনাতে।

ভালোবাসার জোয়ারেতে
করব নদী পরবাসে
সেই নদীর মালিক তুমি
ভাসিয়ে নেবে আমাকে যে
আমি থাকব তোমার বুকে
তুমি থাকবে আমার বুকে
শুনবে না কেউ দেখবে না কেউ
দেখবে শুধু বিধাতা যে।
                   ========================

(25) মরনের অপেক্ষায়

এই অন্ধকারে আমি থাকতে চাই 
আমি অন্ধকারে
ধুকে ধুকে মরতে চাই
ভালোবাসার পবিত্রতা পাইনি বলে
চাইনা আমি জীবন
চাই শুধু আমি মরণ।

যে ভোলোবাসায় পবিত্রতা না থাকে
যে ভালোবাসার মহিমায় মগ্ন হয় না কেউ
সে ভালোবাসার মালা আমি চাই না
তাইতো আমি থাকতে চাই অন্ধকারে
মরতে চাই আমি ধুকে ধুকে

আমার মরনে হয়তোবা কাঁদবে না কেউ
হয়তোবা সমাধিতেও কেউ
আসবে না নিয়ে কোন ফুল
তবুও আমি মরনকেই করতে চাই সাথী।

এই জীবনে না-ইবা পেলাম কারো ভালোবাসা 
পেতাম যদি তবু মরণের ভালোবাসার মালা
মরণ যতদিন তাঁর ভালোবাসার মালা
না পরায় আমার গলায়
ততদিন আমি থেকে যাব
তারই অপেক্ষায়।
                 =======================                  

(26) ভালোবাসার অথৈ জলে

তোমাকে দেবার মতো
নেই যে আমার কিছুই এ জগতে
কি দেব তোমায় প্রিয়
কি দেব তোমায় আমি

পারব শুধু দিতে আমি
একটা জিনিসই
আছে আমার হৃদয় ভরা ভালোবাসা
দেবার মতো প্রেম
নাও যদি তুমি হাত বাড়িয়ে
হয়ে যাবে আমার শ্যাম।
অফুরন্ত ভালোবাসা দেবো আমি তোমায়
ভালোবাসার অথৈ জলে

ভাসাব আমি তোমাকে যে
স্রোতস্বিনী নদী আমি
পাবে না তুমি কূল কিনারা যে
হাবু ডুবু খেতে খেতে
মিশে যাবে আমার মাঝে।
              ======================

(27) আকাশের রামধনু রং

তোমার হৃদয় মানচিত্রে
সবুজ বৃত্তে ফুটানো লাল গোলাপ।
অনন্ত অবসরে দিগন্তের চারিধারে
প্রকৃতি ও দুলছে হাওয়ার দোলা।
                   =====================                  

(28) নিরব কান্না

মৃত্যুর দুয়ারে দাঁড়িয়ে আছি আমি আজ
অশ্রু সজল চোখে ক্লান্ত হৃদয় নিয়ে।
আজ আমি পাথরের মত স্তবীর
সব পথ শেষে ঠিকানা বিহীন,
পথহারা এক পথিক।
অগ্রপথিকের মত আমি চলতে পারিনা,
সোণালী দিনগুলো আজ থমকে গেছ,
নীরব কান্নায় অনাদরে অবহেলায়।
আমাকে মাতিয়ে দিয়েছে বিজয়ী বন্ধুরা
সীমাহীন আবেগে চলে গেছে সবাই,
সব সুখের পানে। আমাকে ফেলে,
মহা মায়াময় কুহুনীয় মায়ায়
ভুলে গেছে চিরতরে, তাই আজ স্তবীর
নীরব কান্নার প্রতিচ্ছবি।
                ======================

(28) মনের আশা

মনের আশা আছে যখন
বলবো তাহা সত্য,
হৃদয়টাকে করতে হবে
লোহার মত শক্ত।
ছুটছি আমি হব জিত
বলব যাহা রাখব ঠিক।
শক্তমনের ভক্ত হব
আকাশ পথে পাড়ি দেব।
গুপ্ত ধনকে খুঁজে নেব
মনের আশা পূর্ণ করবো।
অন্ধকারকে আলো বলে
বাহির হবো অনেক দুরে।
আঁধার বুকে আলো জ্বেলে
ডুবে যাব রসাতলে।
               =====================                

(29) আত্রাই

এখনো শৈশব স্মৃতি মনে পড়ে
একা নিরালার কথা ভাবিলে
ছোট্ট কালের বন্ধু তুমি, তিসনা মিটিয়ে
আমায় ভুরে গেছ তোমার জ্বল হারিয়ে।
তোমার বুকে জাপিয়ে পরেছি
মনে কষ্ট দাওনি, আমায় ভালোবেস।

তোমার স্মৃতি যখন আমার মনে পড়ে
সর্নাত্ব মন বার বার তোমার কাছে টানে।
এখনো ঘুমিয়ে থাকি তোমার বুকে
তবু ঘুম ভাঙ্গেনা তোমার শব্দের গানে।
                  =======================

(30) জন্ম দগ্ধ

জন্মেছি যে লগ্নে
পুড়েছি অশান্তির দহনে।
ক্রমে বাড়িয়াছি দেহমন
অশান্তির দহনে জ্বলিয়াছে জীবন।
কভু বাধিয়াছি শান্তির নীড়
ঝড় এসে ভাঙ্গিয়াছে
রাখেনি কোন তীর
আবার ছুটছি বিহঙ্গের মত
এবার ভেঙ্গেছে ডানা দুটি
জীবন আছে যতক্ষণ
ছুটতে হবে ততক্ষনই গতিশীল
চলছে বিরতীহীন
জীবন চলে স্রোতের তালে
মোর জীবন ঝড়িয়েছে
ব্যর্থতার জালে সোহাগ জোটেনি কপালে
তাইতো যুবে পিরি সুখের দ্বারে দ্বারে।
                   =====================                     

(31) অবাক প্রথিবী

অবাক প্রথিবী, চেয়ে আছে
কতগুলো নক্ষেত্র দিকে
চাঁদের হাসি পায় অপলক।
রাত্রির ঝিঁ ঝিঁ শুরু করেছে ক্লান্ত হরিণ।
ফালগুনের কাঠ ফাটা রুদ্রের পরে
কত গুলো কৃক্ষের মরা পাতা
অঝোঁর ঝরছে অবিরত।
মরা গাছে পেচাঁর গুঞ্জন,
দিক পেতে শুনে সবাই
প্রভাতের আওয়াজ
চাঁদের এই বিদায় বেলায়
সূর্যের অট্ট হাসি পায়।
              ====================

(32) N কে ভালোবাসি

N তোমাকে আকাশ বলব না
আকাশে মেঘ থাকে,
N তোমাকে সাগর বলব না
সাগরে ঢেউ থাকে,
N তোমাকে প্রকৃতি বলব না
প্রকৃতি নয়ন জুড়িয়ে ফেলে,
N তোমাকে ফুল বলব না
ফুল ঝড়ে যায়,
N তোমাকে স্বপ্ন বলব না
স্বপ্ন ভেঙ্গে যায়,
N তোমাকে হীরা চুন্নি পান্না বলব না
তাহাতে মানুষের লোভ থাকে,
N তোমাকে বলব ক ?
N তোমাকে বলব ভালোবাসি
ভালোবাসা চির অমর থাকে
সে কথা তুমি জান কি ?
তোমার জন্য আমার হৃদয়
থাকবে উজার সারা জীবন।
======================               

(33) শূন্য হৃদয়

তোমাকে চাই যে আমি
  মুক্ত ঝরা মনে
এব নিয়ে দিন যায়
  রাত্রি ফিরে আসে।
ঘুমের ঘোড়ে চোখের জলে
  বুক ভেসে যায়
তোমার কথা পড়ে আমার
  মনের কল্পনায়।
শূণ্য হৃদয় করবে পূরণ
  এইতো ভাবনা
বলো ওগো হৃদয় রাণী
  করো শান্তনা।
            ====================

(34) নারীর প্রতি

তুমি নারী নিজেরি ভুলে
হচ্চ খেলার পুতুল,    
চোখের জলে বালিশ ভাসে
দিচ্ছ ভূলের মাশুল।   
পুরুষ শাসিত সমাজে তুমি
পাবে না সহজে অধিকার ,
না হলে সজাগ ভেঙ্গে যাবে সব
আয়োজন বারবার।   
রক্ত মাংসের মানুষ তুমি
তোমারও আছে মন   ;
যুগ যুগ ধরে মিলে মিশে দু’জন
সাজিয়েছে এই ভুবন।   
পুরুষ তোমাকে ঘৃনা করে যত
ভালোবাসে তারও বেশী  
নারী-রমনী কাঁদে আর হাঁসো
পড় গলায় ফাঁসি    
তুমি-ই নিজের শত্রু তোমার
দুঃখ ব্যথার কারন,   
শুদ্ধ কর নিজেকে আগে
একে অন্যকে কর বরন।   
            ===================               

(35) আঘাত
অন্তরে অন্তরে মিল হয় যখন
তখন দুই চোখ বন্ধ হয়ে যায়
স্বপ্ন দেখার ভুবনে চলে যাই।
স্বপ্ন দেখেছিলাম তোমাকে নিয়ে
বাঁধব ছোট একটি সুখের ঘর,
জীবনে আজ কেন এল এত ঝড়
কেন তুমি ঢেলে দিয়ে গেলে
তুমিই ছিলে একমাত্র কল্পনা।
স্বপ্ন ভাবনার অন্তহীন গহচরে
কেন করলে এত বড় ছল না।
তোমাকে নিয়ে দেখে ছিলাম
কত আনন্দ ভরা সুখের স্বপন
কেন মৃত্যুর দুয়ারে আমার জীবন।
                   =====================

(36) স্মৃতির ক্যানভাস
আমিতো রবী ঠাকুরের
কাল জয়ী উপন্যাস
শেষের কবিতা নই
নই বর্ষার প্রথম
ফুটা কদম ফুল
কিংবা শরতের কাঁশ
বা শিউলির মালা
তবে কেন আমায়
ভালোবাসার মিছে আবেগে
জড়াতে চাইছো অযথা।
আমি হলাম অতি
পুরাতন সস্তা কোন
স্মৃতির ক্যানভাস
তাই ভূল করো না
অযথা আমায় ভালোবেসে।
              ===================               

(37) মিনতি

শুকিয়েযায় যদি মেহেদির রং
তবু মনে রেখো
শত যুগ পেরিয়ে গেলেও
বুকে মোরে রেখো
দুর দুরান্তে হারিয়ে গেলেও
সাথে মোরে রেখো।
শত দুর্যোগ জীবনে আসলেও
চুপটি করে থেকো
মোর প্রিয়া, মানস তনয়া
মিনতি আমার রেখো।
             ==================

(38) অভিশাপী

বসন্তের এক মিষ্টি সময়ে
তুমি এসে ছিলে
সুন্দরী রুপসী মেয়ের বেশে
আমারই পাশে,
আমার কমল হৃদয়ে
স্থান দিয়েছিলাম তোমাকে।
অকৃত্রিম ভালোবাসা পাবো বলে
বড় স্বাদ জেগেছিল মনে
তোমার মত সুন্দরীকে
করবো আপন এটাই ছিল মনে।
তুমি এক উজ্জল তারা হয়ে
এসেছিলে আমার পাশে
আমার ঘুমন্ত হৃদয়কে
পুলকিত করেছিলে মুহূর্তের মধ্যে।
আমারই পাশে
তোমার মত অভিশাপীকে
মন থেকে মুছে ফেলেছি।
             ======================      


(38) অবাক পৃথিবী

আক পৃথিবী চেয়ে আছে
কতগুলো নক্ষত্রের দিকে
চাঁদের হাসি পায় অপলক।
রাত্রির ঝিঁ ঝিঁ পোকার গুঞ্জন
দিক পেতে শুরু করেছে ক্লান্ত হরিণ।
ফালগুনের কাঠ ফাটা রুদ্রের পরে
কত গুলো বৃক্ষের মরা পাতা
অঝোঁরে ঝরছে অবিরত।
মরা গাছে পেচাঁর গুঞ্জন,
দিক পেতে শুনছে ক্লান্ত হরিণ।
কাকাতুয়া চেয়ে দেখে 
শেয়ালের কান্না।
দিক পেতে শুনে সবাই
প্রভাতের আওয়াজ
চাঁদের এই বিদায় বেলায়
সূর্যের অট্ট হাঁসি পায়।
            ==================

(39) চিনতে ভূল করেছি

আমি তোমায় চিনতে ভূল করেছি
তাই আজ দুঃখ পেয়েছি।
আমি তোমায় ভালবেসে ফুল দিয়েছি
বিনিময়ে কাটার আঘাত পেয়েছি।
লোক সমাজে বোকা বনেছি
তোমায় মনের মনি কোঠায় রেখে
দুধ কলা কত দিয়েছি
বিনিময়ে কাল সাপ পুষেছি।
ভালোবেসে পুরো মন দিয়েছি
এক সাগর বশী দুঃখ পেয়েছি,
তোমার সাথে অযথা গ্রামের
মেঠো পথ হেটেছি
তাই অনুভবে পায়ে ব্যাথা সয়েছি
আমি বিনা কারনে কথা বলেছি
অবশেষে গাংচিলের মত ঘুরছি।
               ====================

(40) প্রার্থনা

জোস্নায় ঝড়ে পড়ে চাঁদের আবেগ
ভরা নদী তরপায় স্থির দুই চোখ
হৃদয় শংসয় তবু প্রর্তনা ঠোঁটে
দেবে কি আমায় একটু আদর ?
              ===================

8 comments:

  1. আমার বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।শুধু এটুকুই বলব খুব চমৎকার হয়েছে।তার চেয়ে মূল কথা হলো_ আমার হৃদয় কেড়ে নিয়েছে আপনার লেখা এই কবিতা গুচ্ছ।

    ReplyDelete
  2. এক কথায় অসাধারণ প্রতিটি গল্প

    ReplyDelete
  3. প্রেমে পরেছি বলে আজ কবিতা ভালোবাসি, কবিতা বুজতে সিখেছি, কবিতা পরে আমি মূগ্বধ

    ReplyDelete
  4. অসাধারণ,কপি করলাম

    ReplyDelete
  5. প্রেমের কবিতা নিয়ে এত সুন্দর একটি ওয়েবসাইট আমি দেখতে পাবো আমি কোনোদিন স্বপ্নেও ভাবিনি। এত সুন্দর সুন্দর প্রেমের কবিতা আমাদেরকে উপহার দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

    ReplyDelete