Monday, July 30, 2012

দেওবান্দ মাদ্‌রাসার প্রতিষ্ঠাতা কাশেম নানুতুবী ।
ভারতের বিখ্যাত দেওবান্দ মাদ্‌রাসার প্রতিষ্ঠাতা কাশেম নানুতুবী  এর পরিচয় ।

মাওঃ কাশেম নানুতুবী (জন্ম ১২৪ হিজরী) খতমে নবুওয়াত গবেষণায় বলেন- হুজুর পাক (সাঃ) এর যুগ পরবর্তী নবীদের যুগের পরে এবং তিনি সবার মধ্যে শেষ নবী এটা সাধারণ লোকদের ধারণা । বুদ্ধিমান ব্যক্তিরা সময়ের আগে ও পরে হওয়ার ব্যাপারে কোন মাহাত্ম স্বীকার করেন না । তাহলে প্রসংশার ক্ষেত্রে আল্লাহর খাতমুন নাবিয়্যীন বলাটা কি করে সঠিক হতে পারে ?? (তাহযীরুল নাস পৃঃ ০৩) একথা সকল মুসলমানই জানে যে, আল্লাহ পাক রাসূল কে খাতামুন নাবিয়্যীন বা শেষ নবী উপাধিতে আখ্যায়িত করেছেন ( সূরা-আহযাব) । কিন্তু দেওবন্দের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা কাশেম নানুতুবী রাসূল (সাঃ) কে শেষ নবী বলে স্বীকার করেন না । রাসূল (সাঃ) কে আল্লাহ পাক খাতামুন নাবিয়্যীন উপাধিতে ভূষিত করাকে মাওলানা কাশেম নানুতুবী আল্লাহ পাকের ভূল ধরিয়ে দিয়ে বলেন যে, প্রসংশার ক্ষেত্রে আল্লাহর খাতামুন নাবিয়্যীন বলাটা কি করে সঠিক হতে পারে ?? (নাউযুবিল্লাহ্‌) নানুতুবীর উক্ত ফতোয়ার উপর বিশ্বাস রাখলে সুমলিমরা ঈমানদার বলে দাবি করতে পারবেতো ???????
লা মাযহাবী তথা ইসলামের চার মাযহাব সম্পর্কে কিছু কথা ।

(১) প্রথম ফিকহী দল হানাফী মাযহাবঃ- ইমাম আবু হানিফা (রঃ) (জন্ম ৮০ হিজরী) নিজে কোন মাযহাব প্রতিষ্ঠঠা করে যাননি । তাঁর মৃত্যুর ৪০০ হিজরীর পর ইরাকের হামীদ বিন সুলাইমান হানাফী মাযহাবের নাম করণ করেন । পরবর্তীতে আব্বাসীয় খলিফাগণ এই মাযহাবের স্বীকৃতি দান করেন । (ইসলামের  ইতিহাস পৃঃ ৩১২ তাবারেক আলী) । ইমাম সাহেব নিজ হস্তে কোন গ্রন্থও লিখে যাননি । ফিকুহুল আকবর গ্রন্থখানি আবু মুতীব বালখীর লেখা, ইহা দশম শতাব্দিতে লিখা হয়েছে ।

(২) দ্বীতিয় ফিকহী দল মালিকী মাযহাবঃ- ইমার মালিক ইবনে আনাস (রঃ) (জন্ম হিঃ ৯৩ ) স্পেনের খলিফা হিশাম ইবনে আব্দুর রহমান, মালিকী মাযহাব অনুসরণ করার নির্দেশ জারি করেন ।

(৩) তৃতীয় ফিকহী দল হাম্বলী মাযহাবঃ- ইমাম মুহাম্মদ ইবনে ইদ্রিস  (রঃ) (জন্ম ১৫০ হিজরী) দলাদলীতে প্রশ্রয়প্রাপ্ত ভক্ত শাগরিদগণই ক্রমশ এ মাযহবকে স্থায়ীভাবে গড়ে তোলেন ।

(৪) চতুর্থ ফিকহী দল হাম্বলী মাযহাবঃ- ইমাম হাম্বল ইবনে হাম্বল (রঃ) (জন্ম ২৪১ হিজরী) তাঁর মৃ্ত্যুর পর তাঁর হাজার হাজার শিষ্য শাগরিদ তাঁর মাযহাবকে পুপ্রতিষ্ঠিত করেন।

এ চারটি মাযহাব ছারাও আরও কয়েকটি মাযহাবের উদ্ভব ঘটেছিল যা পরবর্বিতে উপরোক্ত চারটি মাযহাবের মধ্যে বিলীন হযে যায় ।   যেমনঃ- ইমাম সুফিয়ঙান সাওরী, ইমাম হাসান বসরি, ইমাম আওয়াযী- এর মাযহাব । এ তিনটি মাযহাব হিজরী তৃতীয় শতক পর্যন্ত চালু ছিল । ইমাম আবু সাওর এর মাযহাবও তৃতীয় শতাব্দী পর্যন্ত চালু ‍ছিল ।
ঐতিহাসিক ইবনে খালদুনের খবর মতে ইমাম দাউদ যাহেরীর মাযহাব হিজরী ৮ম শতাব্দি পর্যন্ত বিদ্যমান ছিল । তাছড়াও ইসহাক ইবনে রাহওয়ার, সুফইয়ান ইবনে ওয়াইনা, ইবনে জারীর তাবারী, লাইস ইবনে সাদ, তাদের মাযহাবও কিছুদিন চালু ছিল । পরবর্তিতে এ চারটি মাযহাব টিকে যায় । তাদের অনুস্বারীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়তে থাকে । তাদের আলেমগণ জনসাধোরণর জন্য উক্ত চার মাযহবের যে কোন একটির অনুসরণ বা তাক্বলীদ (অন্ধ অনুস্বরণ) করাকে ফরজ বলে ফতোয়া প্রদান করেন । যা ইসলামের দৃষ্টিতে সমর্থনীয় ছিলনা । আবুল ফাৎহ মুহাম্মদ বিন আবুল হামান ইবনু দাক্বীদুল ঈদ (মৃঃ ৭০২ হিজরী) চার মাযহাবের প্রচলিত সহীহ হাদীস বিরোধী ফতোয়া সমুহের একটি বিরাট সংকলন তৈরী করে ছিলেন, যার ভূমিকাতে তিনি ঘোষনা করেন যে, এই মাসআলা গুলি চার ইমামের নামে চার মাযহবে চালু থাকলেও এগুলোকে তাঁদের দিকে সম্পর্কিত করা হারাম । এগুলির মাধ্যেমে তাঁদের ওপরে মিথ্যারোপ করা হয়েচে মাত্র যেমানঃ দুররেমুখতারে কুরআন হাদীস বিরোধী পঞ্চাশটি মাসআলা সয়েছে । হেদায়াতে বর্ণিত ১০০ মাসায়েল হাদীস বেরোধী । আল্লামা তাফতাজানী শারাবী, ওয়ালিউল্লাহ দেহলোভী, মোল্লা মুঈন সিন্ধী, আবদুল হাই লক্ষৌবী প্রমুখ বিদ্বানগণ সকলে একথা স্বীকার করেছেন ।

পাঠকদের জ্ঞাতার্থে হানাফী মাযহবের কিতাবে হাদীস বিরোধী ফতোয়ার কিছু নমুনা নিমেন তুলে ধরা হলোঃ-

হেদায়াঃ- আবু হানিফার মৃত্যুর ৪০০ বছর পর লেখা হয়েছে ।
মাসয়ালার মনুনঃ- যদি কোন ব্যক্তি মাতা, ভগ্নি, নিজের কন্যা ও খালা ফুফুকে বিবাহ করে যৌন সঙ্গম তাহলে ইমাম আবু হানিফার মতে, হদ জারি করা হবেনা । (হেদায়া ১ম খন্ড ৪৯৬ পৃঃ মোস্তফায়ী ছাপা)
কাযী খাঁঃ- আবু হানিফা (রঃ) এর মৃত্যুর ৪০০ বছর পর লেখা হয়েছে ।
মাসয়ালার নমুনাঃ- স্ত্রী নিদ্রিত ও পাগলিনী অবস্থায় তার স্বামী (রোযা অবস্থায়) যৌন মিলন করলে কাফফারা লাগবেনা এবং রোযাও নষ্ট হবে না । (কাযী খাঁ: ১ম খন্ড, পৃঃ ১১০ মিসরী ছাপা)
শরহে বেকায়াঃ- আবু হানিফা (রঃ) এর মৃত্যুর ৬০০ বছর পর লেখা হয়েছে ।
মাসয়ালার নমুনাঃ- যদি কোন লোক মৃত স্ত্রীলোকের অথবা চতুষ্পদ জন্তুর স্ত্রী অঙ্গে  বা অন্য কোন দ্বারে রোযা অবস্থায় বলৎকার করে তাহলে তার রোযা নষ্ট হবে না । (শরহে বেকায়াঃ ১ম খন্ড পৃঃ ২৩৮ লক্ষৌর এর ইউসুফী ছাপা)
দুররে মুখতারঃ- আবু হানিফা (রঃ) মৃত্যুর ৯০০ বছর পর লেখা হয়েছে ।
মাসয়ালার নমুনাঃ- অঙ্গুলি ও স্ত্রী লোকের স্তন মলমূত্র দ্বারা নাপাক হয়ে গেলে তিন বার জিব দিয়ে চেটে দিলে পাক হয়ে যাবে (দুররে মুখতার বাবুল আনজাসে, পৃঃ৩৬)
হাদীসে রাসূল (সাঃ) বলেছেন- ইমামের যোগ্য সেই ব্যক্তি হবে ‍যিনি ভালো কুরআন পড়তে পারেন । যদি কুরআন পড়ায় সমান হয় তাহলে যিনি বেশি জ্ঞানী, যদি জ্ঞানেও সমান হয় তাহলে প্রথমে হিজরত কারী যে হবে, এতেও যদি সমান হয় তাহলে ‍যিনি বয়সে বড় তিনিই ইমাম হবেন । (মুসলিম, মিশকাত)
কিন্তু হানাফী ফিকার কিতাবে একধাপ বাড়িয়ে বলা হয়- পূর্বের শর্তাবলী যদি সমান হয়, তাহলে দেখতে হবে কার বউ সুন্দরী । (দুররে মুখতার- পৃঃ ৪১৬), তাতেও যদি সমান হয়, তাহলে দেখতে হবে কার মাথা বড় এবং পুরুষাঙ্গ ছোট । (দুররে মুখতার,তাহাবী ১ম খন্ড মিসরী ছাপা)

Peace TV খ্যাত ডাঃ জাকের নায়েকের সম্পর্কে বাংলাদেশের কিছু আলেম আছে, যারা তাঁর বিরোধিতা করে । তাদের আসল চেহারা চেনার জন্য আমার এই লেখা । জারা ডাঃ জাকের নায়েকের বিরোধিতা করে আসছে, তাদের মধ্যে অন্যতম হলো এই দুই ব্যক্তি । মাওঃ নূরুল ইসলাম ওলীপুরী ও মুফতী মিজানুর রহমান কাশেমী । তাঁরা নিজেদের কে অনেক বড় আলেম মনে করে । আসুন তাদের আসল চেহারা আমরা চিনে নেই ।

*মাওঃ নূরুল ইসলাম ওলীপুরী ও মুফতী মিজানুর রহমান কাশেমী কে ???

নূরুল ইসলাম ওলীপুরী ঢাকা লালবাগ কওমী মাদ্‌রাসা হতে দাওরায়ে হাদীস পাশ, আর মুফতী কাশেমী হলো - শায়খুল হাদীস আজিজুল হক সাহেবের প্রতিষ্ঠান জামেয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্‌রাসার মুফতি । পরবর্তীতে তাবলীগ ও পীর ভক্তদের নিকট ওলীপুরী সাহেব মুফাচ্ছির মুনাযিরে জামান আর কাশেমী সাহেব মুফতি এ আজম উপাধিতে ভূষিত হন । 
যদিও ওলীপুরী ও কাশেমী সাহেব দেশের বিশেষ কোন আলেমদের সাথে মুনাযারা করেন নি । তবে ওলীপুরী সাহেব মুনাযারা করেছে নেত্রকোনার ব্রেলভী গ্রুপের ভ্রান্ত আলেম আলী হুসেন রেজভীর সাথে । তাও আবার কুরআন হাদীস এর বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়ার জন্য নয়, মুনাযারর হয়েছে ইলিয়াসী তাবলীগ  ও দেওবন্দীদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়ার কারণে। উল্লেখ্য যে, ওলীপুরী ও কাশেমী সাহেব হলো ইলিয়াসী তাবলীগ ও দেওবন্দীদের  ভক্ত । ব্রেলভী ও দেওবন্দী উভয় দলের আক্বীদাই ভ্রান্ত । আক্বীদার দিক দিয়ে মনে হয় দেওবন্দী ও ব্রেলভী এ দুইটি ভ্রান্ত মতবাদই এক মায়ের দুটি জমজ সন্তন ।
তাই বলা চলে ওলীপুরী সাহেব রেজভীর সাথে বাহাস বা মুনারাযারা করা যেন নাপাক ‍দিয়ে নাপাক ধৌত করা ্ যা কখনো পাক হওয়ার নয় । ওলীপুরী ও কাশেমী সাহেব মুনাযিরে জামান ও মুফতি আজম হলেও তাদেরই মাযহাবের পীর জিল্লুর সহমান রাজারবাগী ইলিয়াসী তাবলীগ ও দেওবন্দীদের বিরুদ্ধে মুনাযারায় যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে । সেই চ্যালেঞ্জ কিন্তু তাবলীগ ও দেওবন্দী ভক্ত ওলীপুরী ও কাশেমী সাহেব গ্রহণ করতে পারে নাই । যে ব্যক্তিরা সূফীদের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে পারে না । তারাই নাকি তাওহীদবাদী জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে কথা বলে ।
এখানে বলা আবশ্যক যে, ওলীপুরী ও কাশেমী সাহেব মূলত দুটি ভ্রান্ত আক্বীদার পক্ষে কাজ করে যাচ্ছে । একটি হচ্ছে দেওবন্দী অন্যটি হচ্ছে ব্রেলভী । ব্রেলভীদের ভ্রান্ত আক্বীদা সম্পর্কে উপমহাদেশের অনেকে সতর্ক থাকলেও  দেওবন্দীদের ভ্রান্ত আক্বীদা সম্পর্কে লোকজন সতর্ক নয় । কেননা সাধারণ লোকজন তাদের লেবাছের ‍দিকে আকৃষ্ট হয়ে তাদের সম্পর্কে সু-ধারণা রাখে । অথচ তাদের লেবাছের ভিতরে ভ্রান্ত আক্বীদা লুকায়িত আছে । তা জ্ঞানীদের জানা থাকলেও সাধারন মানুষের অজানা । দেওবন্দী আক্বীদাও ইলিয়াসের স্বপ্নের ধর্ম তাবলীগের ভ্রান্ত আক্বীদার দাওয়াতের প্রধান দাঈ হলেন এই ওলীপুরী ও কাশেমী ।