Thursday, May 26, 2016

অস্তিত্বে লড়াই।

প্রতিনিয়তই খুব ভয়ের উপর থাকি। এই বুঝি আমার অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এই বুঝি আমার সবকিছু শেষ হয়ে যাচ্ছে। হায় হায় আমি এখন কি করবো, কোথায় যাবো .......!!! এই ধরনের চিন্তা ভাবনা সবসময় থাকেই । তার কারন আমিতো বৃত্তের যে বিন্দু, সেই বিন্দুতেই শুধু আমি আছি, আর আমার চারপাশ ফাকা। আশেপাশে কেহ নেই। বিপদের সময় যে বিশ্বস্ত কোন কাছের মানুষের কাছে গিয়ে সাহায্য চাবো, এমন কেহ নেই.......!! তাই সবসময় ভয়ের মধ্যেই থাকতে হয়। এই আতঙ্ক আর ভয় এখন প্রতিনিয়তই আমার সাথি। তাই অস্তিত্ব নিয়ে সঙ্কটময় জীবনটাই পার করছি।
নিজের উপর নিজেই কেমন জানি সন্দেহের সৃষ্টি হয়, আমি কি পাড়বো ? আমি কি এটা করতে পারবো ? নাকি হেড়ে যাবো ? সমসময় একটা দিধা দ্বন্দ্বের ভিতরেই থাকি। আমি জানি আমি এটা করতে পারবো, এমনকি করেও যাচ্ছি, মাঝে মাঝে প্রশাংসাও পাচ্ছি। কিন্তু নিজের মাঝে কেমন জেন একটা দিধা বা হেরে যাওয়ার একটা ভয় থেকেই যায়।
আমি এটাও জানি ভয়টা কেন থাকে, ভয়টা থাকার অন্যতম কারণ হলো। এইজে আমি অস্বিত্ব টিকিয়ে রাখার লড়াই করছি, যদি হঠাৎ আমার চালার পথ বন্ধ হয়ে যায় বা নিজের আয় ইনকাম বন্ধ হয়ে যায়, তখন আমি কি করবো। এই যে একটা দিধা কাজ করে, যার কারনে অনেক ভয় লাগে।
যেদিন থেকে নিজের জীবনকে নিজের হাতে তুলে নিয়েছিলাম, যেদিন থেকেই নিজের অস্বিত্ব নিজে টিকিয়ে রাখার একটা ভার এসে পড়ে, যদিও তখন অনেকে অনেক আশা দেখিয়ে ছিল, অনেক আশা দেখিয়ে ছিল, পাশে থাকবে, বিপদে হাত বাড়িয়ে দিবে। কিন্তু খুবিই অল্প কিছুদিন পড়ে আর তাদের কেও খুঁজে পাইনি। তাই তখন থেকেই নিজের অস্বিত্ব নিজের হাতেই তুলে নিয়ে ছিলাম। নেমে গিয়ে ছিলাম জীবন যুদ্ধে। যুদ্ধটা ছিল অনেক কঠিন, এতোটাই কঠিন তা একমাত্র মহান আল্লাহ্‌ তায়ালাই ভালো জানেন।
এক সময় মুরব্বিদের কাছে গল্প শুনতাম, তারা জীবনে অনেক কষ্ট করেছে, আমি মানি তারা কষ্ট করেছে। কিন্তু তাদের কষ্ট আর আমার কষ্টের মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে, তারা যখন জীবন যুদ্ধ করেছে, তখন তারা গ্রামের পরিবেশেই বেশী কষ্ট আর জীবন যুদ্ধটা করেছে। এবং বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই তাদের পাশে তাদের পরিবার ও ছিল । কিন্তু আমি যুদ্ধ করেছি ভিন্ন একটা পরিবেশে, আমি যুদ্ধ করেছি শহুরের পরিবেশে, আর তখন আধুনিক জীবন যাপন সমন্মিত শহুরে পরিবেশে জীবন যুদ্ধ করাটা অনক কঠিন ছিল। সবদিকে আকাশচুম্বি আকাংঙা, তাই নিত্য দ্রব্য থেকে শুরু করে সবদিকেই ছিল আকাশচুম্বি খরচ। সেই সময়টাতে অনেক কষ্ট হয়েছে। অনেক। প্রতিনিয়তই ভয়ে থাকতাম, এই বুঝি আমি হার মানলাম, আর বুঝি সামনে এগুতে পারবো না। দিনে দিনে খরচ বেড়েই চলেছে। প্রথম দিকেতো কোন কিছুই করতাম না, অনেক সময় ধার দেনা করে চলা লাগতো।  এক সময় বুঝতে পারি আসলে পাশে এসে কেহই দাড়াবে না, দেখবে না আমার অবস্থা। তখন থেকেই নেমে পড়ি নতুন জীবনের নতুন অধ্যায়। শুরু করি আয় ইনকাম করার পথ, আল্লাহর রহমতে পেয়েও যাই। এবং আজ অবধি পেয়েই যাচ্ছি। কম হোক আর বেশী হোক। যদি মাঝে মাঝে পথটা বন্ধ হলেও আবার খুলে যায়। আসলে জীবনের অস্বিত্ব টিকিয়ে রাখার খেলায় আর কেহ পাশে না থাকুক। এক মাত্র সৃষ্টি করতা মহান আল্লাহ্‌ তায়াল থাকলে আর কাওকেই লাগেনা । দরকার পড়েনা ।এটাই বাস্তব সত্য, চিরন্তর সত্য। এবং ইনশা আল্লাহ্‌ এই জীবনের অস্বিত্বের টিকে থাকার লাড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন থাকবেন। এটাই বিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আমি জানি কেহ আমার পাশে এসে আর দাড়াবে না। কিন্তু যতোদিন বাঁচবো পৃথিবীতে, ততোদিন নিজের অস্বিত্ব টিকিয়ে রাখার লাড়ই করে যাবো। ইনশা আল্লাহ্‌।  কষ্ট এখন আর কষ্ট মনে হয়না । তাই জীবনটাকে কষ্টের মাঝেই উৎস্বর্গ করে দিলাম।